‘নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্র আরো বড় করতে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ’

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জসহ বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে দারিদ্র্য বিমোচন, শিশু কল্যাণ, পরিবার কল্যাণ ও সমাজগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা একশনএইড।

১৯৮৩ সাল থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি। যার আঞ্চলিক নাম একশনএইড বাংলাদেশ। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানি বিমুখ নীতি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে অলাভজনক এ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে ভোক্তাকণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার (ইয়াং পিপলস) নাজমুল আহসান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এস এম রাজিব

ভোক্তাকণ্ঠ: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত উচ্চ ঝুঁকির দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু এই পরিবর্তন মোকাবিলায় আপনারা কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?

নাজমুল আহসান: একশনএইড বিশ্বব্যাপী কাজ করছে এবং আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে অ্যাডভোকেসি করা। জলবায়ুর যে পরিবর্তন হচ্ছে, আমরা সেই পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে কাজ করছি। বিভিন্ন সময়ে যে দুর্যোগ হয় সেই দুর্যোগ কিভাবে মোকাবিলা করা যায়, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। একই ভাবে আমরা জ্বালানির ক্ষেত্রেও সরকারের সঙ্গে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের সময়ে একশনএইডের অন্যান্য কান্ট্রির সঙ্গে যৌথ ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকি। উন্নত দেশগুলোকে দায়বদ্ধ করার চেষ্টা করে থাকি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গেও আমরা বিভিন্ন রকম দেন-দরবার করে থাকি। এই কাজগুলোই আমাদের ধারাবাহিক ভাবে চলছে।

ভোক্তাকণ্ঠ: জলবায়ু পরিবর্তনে জীবাশ্ম জ্বালানি কতটা দায়ী? এই সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন?

নাজমুল আহসান: জলবায়ু পরিবর্তনে জীবাশ্ম জ্বালানি অবশ্যই দায়ী, এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। কিন্তু এখানে যে প্রশ্নটি আসছে তাহলো, বাংলাদেশ কতটুকুইবা জীবাশ্ম জ্বালানি ভোগ করে বা কার্বন নিঃসরণ করে থাকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ কতটা ভুক্তভোগী। এখানে জলবায়ু পরিবর্তনকে শুধু দেশের কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটাকে বৈশ্বিক আঙ্গিকে ধরতে হবে। আজকে পৃথিবীতে যে উষ্ণায়ন বাড়ছে সেই উষ্ণায়নে জীবাশ্ম জ্বালানি সব থেকে বেশি দায়ী। আবার আমাদের যে জ্বালানি উৎপাদন কাঠামো সেটাও জীবাশ্ম জ্বালানি কেন্দ্রীক। এখন যেটা দরকার তাহলো, পৃথিবীব্যাপী জ্বালানি রুপান্তর এবং এই রুপান্তরে বাংলাদেশকেও অংশগ্রহণ করা দরকার। কারণ আমরা ভুক্তভোগীরা যদি এই রুপান্তরে অংশগ্রহণ না করি, তাহলে আমাদের নৈতিকতার জায়গা দুর্বল করে দেবে। তাই আমি মনে করি এটা খুবই দরকার- বাংলাদেশকে এই মুহূর্তে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাওয়া। এটা নানা কারণে দরকার এবং খুবই দরকার।

ভোক্তাকণ্ঠ: নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের প্রধান বাধা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। এ বিষয়ে বাংলাদেশকে আপনারা কোনো পরামর্শ দিচ্ছেন কি না?

নাজমুল আহসান: আপনারা দেখেছেন যে হঠাৎ করে জ্বালানির দাম বেড়ে গেল। আর এই বাড়ার কারণ হচ্ছে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাপ্লাই চেইনের ডিজাবশন হওয়া। আর সেই কারণে আমাদের মতো দেশগুলো বেশি দামে জ্বালানি কিনতে পারেনি, যে কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমাদের জন্য দুটো কারণে দরকার। এর একটা কারণ হচ্ছে, কার্বন নিঃসরণ না করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা এবং আমরা কার্বন নিঃসরণের বিষয়ে যে কমিটমেন্ট করে ন্যাশনাল ডিটারমাইন কন্ট্রিবিশন জমা দিয়েছি সেই অনুযায়ী কার্বন নিঃসরণ করতে পারবো। একইসঙ্গে জ্বালানির উপর আমাদের এক ধরনের সার্বভৌমত্ব অর্জন করা দরকার। কারণ আমরা জ্বালানি তেলসহ যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করি, সেটা কেনার (আমদানি) সময়েও নানা ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়। সুতরাং নবায়নযোগ্য জ্বালানির বড় উপকার হচ্ছে- এটা শুধু জলবায়ু সহনশীল নয়, এটা আমাদের জ্বালানি অধিকার নিশ্চিত করে। অর্থাৎ আমাদের আমদানি করতে হয় না। এখন আমাদের সোলার আছে, বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা আছে। তাহলে কেন সেটা ব্যবহার করতে পারবো না? সরকারের কাছে দাবি জানাই- জীবাশ্ম জ্বালানিতে যে সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে সেটা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে দেওয়া হোক এবং কিভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্র আরও বড় করা যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হোক।

ভোক্তাকণ্ঠ: ভূমি সংকটে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানানো হচ্ছে। এ বিষয়ে একশনএইড বাংলাদেশের পরামর্শ কী?

নাজমুল আহসান: এটা সত্য যে আমরা ছোট্ট একটি দেশ। কিন্তু আমাদের এই জনবহুল দেশে অনেক জ্বালানির চাহিদা। আবার সরকারের নীতিমালায় তিন ফসলি জমিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা নবায়নযোগ্য প্লান্ট করা যাবে না। আমরাও এর সঙ্গে একমত। কিন্তু আমরা যেটা মনে করি- এর বাইরেও অনেক সুযোগ রয়েছে, সেই জায়গা কাজে লাগাতে হবে। আমরা দেখেছি যে, কিভাবে কাপ্তাই লেকের মতো অন্যান্য লেক ব্যবহার করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। কিভাবে ধীরে ধীরে বায়ুবিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করা যায়। কিভাবে কক্সবাজারে ৬০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মতো আরও কেন্দ্র করা যায়। যে জমি পতিত পড়ে আছে বা গ্রামে-শহরের যে ছাঁদ গুলো অব্যবহৃত পড়ে আছে, সেগুলো কিভাবে ব্যবহার করা যায়। কাজেই এগুলো যে ভূমি সংকটে আটকে থাকবে, তা মনে হয় না। এগুলো আরও ভিন্ন ভাবে চিন্তা করা দরকার। ভিন্ন যে উপায়গুলো রয়েছে সেগুলো যদি সঠিক উপায়ে চিন্তা করি, তাহলেও আমরা বিদ্যুতের একটা বড় অংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আনতে পারবো।

ভোক্তাকণ্ঠ: ২০৪১ সালে দেশে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু ঘোষনা অনুযায়ী এই সময়ে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব কি-না?

নাজমুল আহসান: যদি পরিকল্পনা থাকে, তাহলে এটা অবশ্যই সম্ভব। হাতে এখনো ১৭ বছর আছে। এই ১৭ বছরকে কিভাবে ব্যবহার করবো, তার উপর নির্ভর করছে কতটুকু যেতে পারবো। এখন আমরা যদি সামনের ৫/৭ বছর বসে থাকি এবং তারপরে যদি বলি আমাদের ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পেতে হবে, তখন অল্প সময় মনে হবে। কিন্তু এখন থেকেই যদি উদ্যোগ নেই- কিভাবে কতটুকু সৌরবিদ্যুৎ থেকে করবো, কতটুকু বায়ুবিদ্যুৎ থেকে করবো, আমাদের সমুদ্র উপকূল থেকে কতটুকু করবো, কিভাবে নেট মিটারিং সিস্টেমকে আরও বেশি কার্যকর করবো। এগুলো যদি করতে পারি তাহলে অবশ্যই সম্ভব। এখানে না পারার কোনো কারণ আমি দেখছি না।

ভোক্তাকণ্ঠ: ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৮৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ সেই টার্গেট কতটুকু পূরণ করতে পারবে বলে মনে করেন?

নাজমুল আহসান: আমরা ২০৪১ সালের যে টার্গেট নিয়েছি সেটা যদি কার্যকর করতে পারি এবং এ কার্যক্রম যদি অব্যাহত থাকে তাহলে অবশ্যই সম্ভব হবে। আর এটা আমাদের করতেই হবে। কাজেই এটা না করার কোনো সুযোগ নেই।

ভোক্তাকণ্ঠ: পরিবেশ দূষণ বা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে বেশি দায়ী কারা? শিল্পোন্নত দেশের দায়ভার কী অনুন্নত দেশগুলোতে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে?

নাজমুল আহসান: এই যে জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, সেই ব্যবস্থাপনা করেই তারা শিল্পে সমৃদ্ধ হয়েছে এবং তাদের অনেক বেশি ফসিল ফুয়েল পোড়াতে হয়েছে এবং হচ্ছে। তাই এর জন্যে তারাই দায়ী। আর এটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। যদিও তারা ওই দায়িত্বের জায়গা থেকে কিছুই করে না। তবে এটা নিয়ে বলার অপেক্ষা থাকে না যে- তারা এখনো যেভাবে কার্বন নিঃসরণ করে যাচ্ছে, যেভাবে পরিবেশ দূষণ করে জলবায়ু পরিবর্তন করছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর তুলনাই হয় না। আগেই বলেছি যে- জলবায়ু পরিবর্তনকে কোনো ভৌগোলিক কাঠামোর মধ্যে আটকে রাখা যায়না, এটা একটা বৈশ্বিক সংকট। সুতরাং যারাই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে দায়ী থাকুক না কেন তার ভুক্তভোগী সবাই। তবে আমাদের জন্যে সব থেকে বেশি। কারণ আমাদের মোকাবিলা করার সক্ষমতা ওদের থেকে কিছুটা হলেও কম। কারণ তাদের প্রস্তুতি আমাদের থেকে ভালো বা তাদের মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। আর সে কারণে আমরা আরও বেশি ভুক্তভোগী।

ভোক্তাকণ্ঠ: দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে একশনএইড বাংলাদেশ?

নাজমুল আহসান: আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমদের কাজটা মূলত হচ্ছে পলিসি লেভেলের সঙ্গে। অর্থাৎ কিভাবে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব বা মনোযোগ দেয়। পাশাপাশি যাদের সঙ্গে আমরা কন্টিনিউ কাজ করি এই বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করা। এছাড়াও কিছু কিছু জায়গায় আমরা চেষ্টা করি যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি না হলেও কিছুটা ক্লিন এনার্জি বা কিভাবে বায়ু গ্যাস দিয়ে নিজেদের জ্বালানি চাহিদাটুকু উৎপাদন করতে পারে এবং তাদের পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে পারে। এই ধরনের উদ্যোগগুলো আমাদের আছে। কিন্তু আমদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে এডভোকেসি করা বা সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করা। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের সঙ্গে ও দেন-দরবার করে সেটা সামগ্রিক জায়গা থেকে কিভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায়, সেই বিষয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে মনে করিয়ে দিতে চাই।

ভোক্তাকণ্ঠ: ১৯৮৩ সাল থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে একশনএইড বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশের খাদ্য ও জ্বালানি উন্নয়নে আপনাদের করণীয় কি?

নাজমুল আহসান: আমরা প্রধানত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বা তাদের অধিকার আদায়ের চেষ্টা করি। তাদের সঙ্গে নিয়ে এবং তাদের সঙ্গে কাজ করি। এখানে তাদের যে ইস্যুগুলো রয়েছে সেই ইস্যুগুলো কিভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য যা যা করার দরকার সেটা তারাই যাতে করতে পারে সেই বিষয়েই তাদেরকে সহযোগিতা করি এবং এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকি।

ভোক্তাকণ্ঠ: নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে যুবসম্পৃক্ততা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন সেমিনার করছে ক্যাব? এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

নাজমুল আহসান: আমার কাছে মনে হয় এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ আমরা যে রুপান্তরের কথা বলছি সেই রুপান্তরের একটা হলো- ভবিষ্যত বাংলাদেশ এবং যুব সমাজের বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয়টা হলো- যে রুপান্তরের কথা আমরা বলছি এই রুপান্তর করবে কারা। সেটার জন্যে যুব শক্তিকেই সবার সামনে আমাদের নিয়ে আসতে হবে এবং তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তাদের নেতৃত্বে এই কার্যক্রমগুলোকে আরও বেশি আশাবাদীর জায়গা তৈরি করতে হবে। আসলে যুবকদের মধ্যেই সেই সক্ষমতা আছে- নতুন একটা বাংলাদেশ তৈরি করা এবং পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ তৈরি করা। সেই বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর আমাদের অধিকার এবং নিয়ন্ত্রণ তৈরি হবে, আর সেটা যুবদের পক্ষেই সম্ভব। এ বিষয়ে ক্যাব যে উদ্যোগ নিয়েছে সেই উদ্যোগের জায়গা থেকে আমরা মনে করি- এই কার্যক্রমের সঙ্গে যুবরা যতো বেশি যুক্ত হবে, ততো বেশি রুপান্তর প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে, ততো বেশি রুপান্তর প্রক্রিয়া আরও বেশি দক্ষ হবে।

ভোক্তাকণ্ঠ: নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে যুবসম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে একশনএইড বাংলাদেশ কি উদ্যোগ নিয়েছে?

নাজমুল আহসান: নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে যুবকদের কিভাবে যুক্ত করা যায়, একশনএইড বাংলাদেশ ক্যাবের সঙ্গে সে বিষয়ে যৌথ ভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের (যুবকদের) সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যুবকের নেতৃত্বে কি ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যায়, ছোট ছোট ইন্টারভেনশন নিয়ে কিভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায়, সেই উদ্যোগগুলো আরও বেশি আমরা গ্রহণ করছি। আমরা মনে করি- এই কার্যক্রমগুলো চলমান থাকবে এবং এই উদ্যোগগুলো বাংলাদেশের রুপান্তরের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।

ভোক্তাকণ্ঠ: আপনার যদি আর কিছু বলার থাকে?

নাজমুল আহসান: আমরা যেটা বলতে চাই তাহলো- জ্বালানি রুপান্তরের কোনো বিকল্প দেখছি না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বে সংকট তৈরি হয়েছে। আর এতে অর্থনৈতিক যে ব্যবস্থা সামনের দিকে যাচ্ছে সেখানে আমরা রুপান্তরের কোনো বিকল্প দেখছি না। সুতরাং জ্বালানির এই রুপান্তরটা এখানে অপরিহার্য। এখানে যত তাড়াতাড়ি এই রুপান্তর প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারবো, তত তাড়াতাড়ি জাতি হিসেবে আমরা প্রস্তুত হবো ভবিষ্যত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্যে। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি- যুবকরাই হচ্ছে পরিবর্তনের সেই শক্তি। তাদেরকে যদি আমি এখানে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এই দেশের যুবসমাজ রুপান্তর প্রক্রিয়াকে একটা সম্ভাবনাময় জায়গাতে নিয়ে আসতে পারবে। আর এটাই আমার প্রত্যাশা ও কাম্য।